বার্তাকক্ষ প্রতিবেদন: দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় মামলায় আত্মসমর্পণ করে জামিন পেয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ। বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর) ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কেএম ইমরুল কায়েশের আদালতে আইনজীবীর মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন তিনি।
তার পক্ষে জামিন আবেদনের শুনানি করেন ব্যারিস্টার মাসুদ মজুমদার। অপরদিকে দুদকের পক্ষে মীর আহম্মেদ আলী সালাম জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত আগামী ধার্য তারিখ পর্যন্ত ডা. মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদের জামিন মঞ্জুর করেন। দুদকের কোর্ট পরিদর্শক আমিনুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
এর আগে গত ৫ অক্টোবর আত্মসমর্পণ করতে আদালতে এসেছিলেন ডা. মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ। কিন্তু বিচারক অন্য মামলায় ব্যস্ত থাকায় সেদিন শুনানি করতে পারেননি। এরপর তার আইনজীবী আত্মসমর্পনের আবেদন তুলে নেন। সম্প্রতি আবুল কালাম আজাদসহ ৬ জনকে দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দিয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী।
চার্জশিটভুক্ত অপর ৫ আসামি হলেন- রিজেন্ট গ্রুপ ও রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদ ওরফে সাহেদ করিম, স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবেক পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিকসমূহ) ডা. আমিনুল হাসান, উপ-পরিচালক ( হাসপাতাল-১) ডা. মো. ইউনুস আলী, সহকারী পরিচালক ( হাসপাতাল-১) ডা. মো. শফিউর রহমান এবং গবেষণা কর্মকর্তা ডা. মো. দিদারুল ইসলাম।
চার্জশিটে আসামিদের বিরুদ্ধে পরস্পর যোগসাজশে ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে লাইসেন্স নবায়নবিহীন বন্ধ রিজেন্ট হাসপাতালকে ডেডিকেটেড কোভিড হাসপাতালে রূপান্তর, সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর ও সরকারি প্রতিষ্ঠান নিপসমের ল্যাবে ৩ হাজার ৯৩৯ জন কোভিড রোগীর নমুনা বিনামূল্যে পরীক্ষা করার অভিযোগ আনা হয়েছে। যেখান থেকে তারা রোগী প্রতি ৩ হাজার ৫০০ টাকা হিসেবে মোট এক কোটি ৩৭ লাখ ৮৬ হাজার ৫০০ টাকা অবৈধ পারিতোষিক হিসেবে নিয়েছেন।
এছাড়া চার্জশিটে রিজেন্ট হাসপাতালের মিরপুর ও উত্তরা শাখার চিকিৎসক, নার্স, ওয়ার্ডবয় ও অন্যান্য কর্মকর্তাদের খাবার খরচ বরাদ্দের বিষয়ে ১ কোটি ৯৬ লাখ ২০ হাজার টাকার মাসিক চাহিদা তুলে ধরাসহ সমঝোতা স্মরকের খসড়া স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়ারও অভিযোগ আনা হয়েছে তাদের নামে।
সব মিলিয়ে আসামিদের নামে সর্বমোট ৩ কোটি ৩৪ লাখ ৬ হাজার ৫০০ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। এ বিষয়ে দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০/১০৯ ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন-১৯৪৭ এর ৫ (২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
গত বছর ২৩ সেপ্টেম্বর দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ এ পাঁচজনের বিরুদ্ধে বাদী হয়ে এ বিষয়ে মামলা করেন ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী। সেখানে আবুল কালাম আজাদকে আসামি করা হয়নি। তবে তদন্তে নাম আসায় চার্জশিটে তার নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
ইউকে/এএস