সকল ধরনের সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে রাবি শিক্ষক সমিতির নিন্দা

রাবি সংবাদদাতাঃ সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বাড়ি-ঘরে হামলা, আগুন দেওয়া, লুটপাট, শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করাসহ সকল ধরনের সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষক সমিতি। এসব সহিংসতায় জড়িতদের তদন্তের মাধ্যমে খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিও জানিয়েছে সংগঠনটি।

বুধবার (২০ অক্টোবর) বিকালে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আশরাফুল ইসলাম খান স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এসব দাবি জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা ক্ষুব্ধ, মর্মাহত, পীড়িত ও লজ্জিত বোধ করছি। আমরা এসব ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। আবহমানকাল থেকেই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ হিসেবে বাংলাদেশে সব ধর্মের মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে সহাবস্থান করে আসছে। কিন্তু আমরা লক্ষ করেছি, দেশে উগ্র মৌলবাদী গোষ্ঠীসহ স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী অতীতে নানা সময়ে এই সহাবস্থান নষ্টের চেষ্টা করেছে।

সাম্প্রতিক এসব সহিংসতার সূত্রপাত কীভাবে হলো, কীভাবে এর বিস্তার ঘটল তা এখনো তদন্তাধীন বিষয়। কারা এসব ঘটিয়েছে তা এখনো নিশ্চিত করে জানা না গেলেও এটা নিশ্চিত যে, এ ঘটনা আমাদের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে অত্যন্ত নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। সহিংসতার শিকার এসব মানুষের জীবন এতে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে, নিজ দেশে তারা পরবাসীর মতো বাস করতে বাধ্য হচ্ছেন, যা একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশে কখনোই কাম্য নয়।

দেশে ধর্মীয় উগ্রবাদ ও চরমপন্থা রুখতে সাংস্কৃতিক চর্চা বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। আমরা সরকারের কাছে এই দাবিও জানাই, দেশের প্রতিটি ইউনিয়নে পাঠাগার স্থাপন, নাটক-সঙ্গীত- চলচ্চিত্রসহ সকল সাংস্কৃতিক চর্চা বাড়ানো ও খেলাধুলার পরিবেশ তৈরি করার মাধ্যমে নতুন প্রজন্মের সঠিক বিকাশের ব্যবস্থা করুন। তাহলে এসব ঘটনা কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ সকল ধর্মের মানুষের, সকল ধরনের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের দেশ হিসেবে বিশ্বের বুকে বাংলাদেশের যে পরিচিতি রয়েছে তা সমুন্নত রাখতে সকলেরই এগিয়ে আসা উচিত বলে আমরা মনে করি।

আরও বলা হয়, কুমিল্লা, রংপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া এসব সহিংসতার পেছনে যারাই জড়িত থাকুক সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে তাদের অবিলম্বে খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ও যে অসাম্প্রদায়িক চেতনার স্বপ্নের ভিত্তিতে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল সেই চেতনার বিনাশকারী এসব অপচেষ্টা কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে শক্ত হাতে দমন করা হোক।

ইউকে/এএস