রাবি’র হলে সিট না পেয়ে শিক্ষার্থীদের কক্ষে আটকে রেখে তালা

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ জিয়াউর রহমান হলে শিক্ষার্থীদের কক্ষে আটকে রেখে তালা দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (৯ নভেম্বর) দুপুরে হলের ২য় ব্লকের ২য় তলার ৫ টি রুমে তালা লাগিয়ে দেয়ার এ ঘটনা ঘটে।

ঘটনার সাথে জড়িত অর্থনীতি বিভাগের ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী সাইদ বিন একরাম দায় স্বীকার করেছে। সাইদের দাবি, বারবার প্রতিশ্রুতি পেয়েও হলে উঠতে না পারায় প্রতিবাদ জানাতে রুমগুলোতে তালা দিয়েছেন। বিভিন্ন সময়ে তিনি কক্ষে উঠার জন্য হল প্রশাসন ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলেছেন। তারা বারবার প্রতিশ্রুতি দিয়েও হলে সিট দেননি। সর্বশেষ ২২০ নম্বর কক্ষে একটি সিট পেলেও সেটি পরবর্তীতে দখল হয়ে যায়।

হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা জানান, মঙ্গলবার দুপুরের দিকে হলের ২য় ব্লকের ২য় তলায় ২১৯ থেকে ২২৩ নম্বর পর্যন্ত মোট ৫ টি কক্ষে তালা লাগিয়ে দেয়া হয়। এতে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী কক্ষের ভেতরে আটকা পড়েন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর লিয়াকত আলীর উপস্থিতিতে হল প্রশাসনের কর্মচারীরা তালাগুলো ভেঙে শিক্ষার্থীদের বের করেন। এদের মধ্যে একজন ভর্তি হতে আশা শিক্ষার্থীও ছিলেন।

তালা লাগানোর সময় ২২২ নম্বর কক্ষে পড়ছিলেন দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী সোহানুর রহমান। তিনি বলেন, আমি তখন পড়ছিলাম। বাহির থেকে দরজা নড়াচড়ার শব্দ হচ্ছিল। দরজার কাছে গিয়ে দেখি দরজা খুলছে না। বুঝতে পারি দরজায় তালা লাগানো হয়েছে ।

তিনি আরও বলেন, দরজার ফাঁক দিয়ে সাদা শার্ট পরিহিত একটা ছেলেকে চলে যেতে দেখলাম। ছেলেটি যাওয়ার সময় বলেছিল, ‘ভাই একটু পরেই খুলে দেওয়া হবে।’

তালা দেয়ার ঘটনায় জড়িত সাইদ বিন একরাম বলেন, এটা শুধু আমার একার বিষয় না। আমিসহ অনেকেই হলে উঠতে পারছি না। অন্যরা টাকা দিয়ে, রাজনৈতিক প্রভাব কাটিয়ে হলে উঠে যাচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে যাদের সিট দরকার তারা হলে উঠতে পারছে না। এসবের প্রতিবাদে আমরা তালা দিয়েছি। এসময় তার সাথে আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী ছিলেন বলেন দাবি করেন তিনি। তবে তাদের কারও নাম প্রকাশ করেন নি।

তিনি আরও বলেন, হলের ২২০ নম্বর রুমের একটি সিটে আমার উঠার কথা ছিলো। কিন্তু আমি উঠার আগেই অন্যরা ওই সিট দখলে নিয়েছে। এতে আমি ক্ষুব্ধ হয়ে ওই ব্লকের ৫টি কক্ষে তালা লাগিয়েছি।

এদিকে ঘটনার প্রতিবাদে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে হলের প্রধান ফটকে তালা দিয়ে বিক্ষোভ করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর লিয়াকত আলী, হল প্রাধ্যক্ষ ড. সুজন সেনসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা আলোচনা করে তালা খুলে দেন।

এ বিষয়ে জিয়া হলের প্রাধ্যক্ষ ড. সুজন সেন বলেন, রুমে তালা দেওয়ার খবর পেয়েই দ্রুত সেটি ভেঙ্গে ফেলেছি। এই ঘটনার পর জড়িতদের নাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কাছে পাঠিয়েছি বিশ্ববিদ্যালয় ও হল প্রশাসন তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা যাচাই করে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর লিয়াকত আলী বলেন, কোন ঘটনা ঘটলেই সাথে সাথে ব্যবস্থা নেওয়া যায় না। আমরা এ বিষয়ে তদন্ত করছি। এর সাথে যারাই জড়িত থাকুক না কেনো তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ইউকে/এসএ/এসএম