পানির জন্য দুই কৃষকের আত্মাহুতি: ঘটনাস্থলে তদন্ত কমিটি

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে দুই আদিবাসী কৃষকের আত্মহত্যার ঘটনায় কৃষি মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি তদন্ত করেছে। মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত তদন্ত কমিটির সদস্যরা গোদাগাড়ীর ঈশ্বরীপুর ও নিমঘুটু গ্রামে ছিলেন। তারা স্থানীয় কৃষক ও মৃতদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলেন।

ঘটনাটি তদন্তের জন্য গত রোববার কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব তাসনিম জেবিন বিনতে শেখ চার সদস্যের তদন্ত কমিটি করে দেন। কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (সার ব্যবস্থাপনা ও মনিটরিং) আবু জুবাইর হোসেন বাবলুকে। কমিটিতে সদস্য হিসেবে নাটোর বিএডিসির (ক্ষুদ্রসেচ) নির্বাহী প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন, বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) নওগাঁর নির্বাহী প্রকৌশলী সমশের আলী এবং জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি হিসেবে কমিটির সদস্য হিসেবে আছেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মুহাম্মদ শরিফুল হক।

মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কমিটির সদস্যরা প্রথমে বিএমডিএ’র গভীর নলকূপটি পরিদর্শন করেন। এরপর তারা দেওপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) কার্যালয়ে বসে কয়েকজন ব্যক্তির সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। এরপর কমিটির সদস্যরা মৃত কৃষক অভিনাথ মারান্ডি এবং তার চাচাতো ভাই রবি মারান্ডির জমি পরিদর্শনে যান। পরে তদন্ত কমিটির সদস্যরা অভিনাথের বাড়ির সামনে গিয়ে দুই পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন।

এ সময় তারা অভিযোগ করেন, পানি না দেওয়ার কারণে দুই কৃষক আত্মহত্যা করেছেন। তবে এর আগে ইউপি কার্যালয়ে কয়েকজন গভীর নলকূপ অপারেটর সাখাওয়াত হোসেনের পক্ষ নিয়ে সাফাই গান। তারা দাবি করেন, পানি নিয়ে কোন সমস্যা নেই। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর কৃষকেরা দেশীয় মদ পান করেন। এ কারণেই হয়ত তাদের মৃত্যু হয়েছে।

তদন্ত কমিটির প্রধান আবু জুবাইর হোসেন বাবলু বলেন, ‘আমাদের তদন্ত এখনও শেষ হয়নি। আমার হাতে সাতদিন সময় আছে। দুজনের মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী হলে অবশ্যই সেটি আসবে।’

উল্লেখ্য, গত ২১ মার্চ রবি ও অভিনাথ বিষপান করেন। সেদিনই বাড়িতে অভিনাথের মৃত্যু হয়। দুদিন পর হাসপাতালে মারা যান রবি। মৃত্যুসনদে বলা হয়েছে বিষক্রিয়ায় রবির মৃত্যু হয়েছে। দুই কৃষকের মরদেহের ময়নাতদন্ত হলেও প্রতিবেদন এখনও প্রস্তুত হয়নি।

তাদের মৃত্যুর জন্য গভীর নলকূপ অপারেটর সাখাওয়াতকে দায়ী করে দুই পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় দুটি আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা করা হয়েছে। প্রথম মামলাটি হওয়ার পরই সাখাওয়াত পালিয়েছেন। পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।

ইউকে/এসই