নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহী মহানগরীর খানসামার চক এলাকায় বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) ভোর রাতে বৈদ্যুতিক সর্টসার্কিট থেকে সি-কিউব কার কেয়ার সেন্টারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ঘটনা ঘটেছে। এতে ওই কার সেন্টারে থাকা ৫টি প্রাইভেট কারসহ বিভিন্ন মালামাল পুড়ে গেছে।
এ সময় আগুনের লেলিহান শিখা কার সেন্টারের পাশে ১০ তালা ভবনের দ্বিতীয়তলায় থাকা ‘গ্রান্ড তোফা’ কনভেনশন হলে ছড়িয়ে পড়ে। এতে ওই কনভেনশন সেন্টারের এসি, সোফা, চেয়ার, টেবিলসহ বেশ কিছু মালামাল পুড়ে গেছে। অগ্নিকাণ্ডের পর ওই ভবনের তিনতলা ও দুইতলায় ফাটল দেখা দিয়েছে।
ভবনের মালিকপক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে- ভয়াবহ এই অগ্নিকাণ্ডে প্রায় ১০ কোটি টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। তবে ফায়ার সার্ভিস এর কর্মকর্তারা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন এতে ২ কোটি টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত সাড়ে ৩টার দিকে আশিব মাহবুব সানির কার সেন্টারে বৈদ্যুতিক সর্ট সার্কিট থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। পরে তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু কার সেন্টারে কোন লোক না থাকায় কোনো প্রাণহানি ঘটেনি। পরে নীচে বিকট বিস্ফোরণের শব্দে ওই ভবনে বসবাসকারীরা জেগে যান। তারা দ্রুত রাজশাহী সদর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সে খবর দেন। তবে এ সময়ের মধ্যেই আগুন আরও ভয়াবহ রূপ নেয়। আগুনে কার সেন্টারের ভেতরে থাকা সিলিন্ডারগুলো বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হতে থাকলে ভবন ও আশপাশে থাকা মানুষের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। কার সেন্টার থেকে একই মালিকের পাশের ভবনে আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
কার সেন্টার ও কনভেনশন সেন্টারের মালিক আশিব মাহবুব সানি বলেন, কার সেন্টারের তার নিজস্ব দুইটি ও কাস্টমারের তিনটি গাড়ী, আধুনিক যন্ত্রপাতি, বিভিন্ন মালামাল ও নগদ টাকা ছিলো। যা আগুনে পুড়ে গেছে। আর কনভেনশন সেন্টারের পাঁচটি এসি, টিভিসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র ছিলো। আর দামি ইন্টিরিয়র ডেকারেশন করা ছিল। যা আগুনে পুড়ে গেছে। এই ঘটনায় তার প্রায় ১০ কোটি টাকার সম্পদ ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে।
এদিকে, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স রাজশাহী সদর দপ্তরের সিনিয়র স্টেশন অফিসার আব্দুর রউফ বলেন তারা ভোর ৪টা ২০ মিনিটে আগুনের খবর পান। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স রাজশাহী সদর দপ্তরের দুইটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। পরে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশন, নওহাটা স্টেশন, কাশিয়াডাঙ্গা উত্তর স্টেশনসহ মোট ১২টি ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। আর অগ্নিকাণ্ড নিয়ন্ত্রণের এই পুরো অভিযান সার্বিকভাবে তত্বাবধান করেন- ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স রাজশাহী সদর দপ্তরের সহকারী পরিচালক রফিকুল ইসলাম।
দুই ঘণ্টা চেষ্টা করার পর ভয়াবহ সেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। পরে দুর্ঘটনাস্থলে এক ঘণ্টা ডাম্পিংয়ের কাজ চলে। আগুনে কার সেন্টারের ভেতরে থাকা পাঁচটি গাড়ী, এসি, টিভিসহ বিভিন্ন প্রকার যন্ত্রপাতি ও মালামাল ও কনভেশন সেন্টারে থাকা এসি, টিভি, চেয়ার, সোফা, টেবিলসহ বেশ কিছু মালামাল পুড়েছে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স রাজশাহী বিভাগীয় উপ-পরিচালক (ডিডি) ওহিদুল ইসলাম বলেন, তারা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন বৈদ্যুতিক সর্টসার্কিট থেকেই কার সেন্টারে আগুনের সূত্রপাত হয়েছপ। পরে তা পুরো কার সেন্টার এবং পাশের ভবনের দ্বিতীলায় অবস্থিত তোফা কনভেনশন সেন্টারে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এতে প্রায় দুই কোটি টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। এরপরও তারা ক্ষয়-ক্ষতি নিরূপণের জন্য পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন বলে উল্লেখ করেন।
ইউকে/এএস