ছেলের ভরণ-পোষণের দাবি সাবেক স্ত্রীর

নিজস্ব প্রতিবেদক: ছেলের ভরণ-পোষণ ও লেখাপড়ার খরচের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন এক মা। তিনি বলেন, বিয়ের পর আমার স্বামী ভারতে চলে যান। সেখানেই বসবাস শুরু করেন। কিন্তু ছেলে হলেও তিনি এক পয়সাও দেননি এখনও। বুধবার (২৫ অক্টোবর) রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন করেন রুমানা ইয়াসমিন নামের এক নারী।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ২০০১ সালে পারিবারিক ভাবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের সাবেক অধ্যাপক প্রফুল্ল চন্দ্র সরকারের ছেলে পংকজ কুমার সরকারের সাথে। সে সময় পংকজ ধর্ম পরিবর্তন করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে আমাকে বিয়ে করেন। বিয়ের বছরখানেক পর আমাদের পুত্র হয়। সে সময় আমাদের ভারতের কলকাতায় নিয়ে যাওয়া হয়। তারা আমাকে দেশে পাঠিয়ে দিয়ে আমার সন্তানকে রেখে দেওয়ার পরিকল্পনা করে। আমি বিষয়টি বুঝতে পেরে আমার ছেলেকে নিয়ে দেশে চলে আসি। চার বছর পর আবার সেখানে গেলে তারা আমাকে বাসায় ঢুকতে দেয়নি।

তিনি আরও বলেন, পংকজের কাছে অধিকার চাইতে গেলে তার বাবা প্রফুল্ল চন্দ্র সরকার ছেলেকে দিয়ে আসতে বলে। কিন্তু আমি আমার ছেলেকে দিতে না চাইলে তারা বিভিন্নভাবে হুমকি দিতে থাকে। কিন্তু এই পৃথিবীতে সন্তান ছাড়া আমার আপন আর কেউ নেই। তাই আমি তাদের দেয়নি।

রাবির সাবেক অধ্যাপক প্রফুল্ল চন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে জোর করে ডিভোর্স করিয়ে নেওয়ার অভিযোগ করেন তিনি। তিনি বলেন, ২০১৩ সালের ২৬ নভেম্বর তিনি আমার স্বামীর অভিভাবক হিসেবে এসে একটি দলিলে স্বাক্ষর নিয়ে নেন। এর কিছুদিন পর আমার দেনমোহরের টাকা বুঝিয়ে দেন। কিন্তু আমার ছেলের জন্য কোনো খরচ দেননি তিনি। ছেলের ভরণ-পোষণ ও খোরপোসের টাকা চাইতে গেলে তিনি অপমানও করেন।

তিনি বলেন, আইন অনুযায়ী আমি আমার ছেলের সকল খরচ পাবো। কিন্তু তারা এই খরচ দিতে চাচ্ছে না। আমাকে শুধু অপমানই করছে। এদিকে তার পিতৃপরিচয়ও দিতে পারে না। আমার ছেলে এখন বেসরকারি কলেজে উচ্চ মাধ্যমিকে পড়াশোনা করছে। তার মানসিক অবস্থাও দিনদিন খারাপ হচ্ছে।

এবিষয়ে পংকজ কুমার সরকারের বাবা অধ্যাপক প্রফুল্ল চন্দ্র সরকার বলেন, আমার ছেলের সাথে রুমানার স্বাভাবিক বিয়ে হয়নি। এই বিয়েতে আমার সম্মতিও ছিল না। তারা প্রেম করে বিয়ে করেছে। ভরণ-পোষণ তো আমি দেবো না। তার স্বামী দেবে। সে তার স্বামীর কাছ থেকে ভরণ-পোষণ নিবে। মানবিক দিক বিবেচনা করে আমি তাকে টাকা দিয়েছিলাম। তার বাচ্চাকে রেখে বড় করতে চেয়েছিলাম। তাকে বলেছিলাম তোমার ছেলে তোমারই থাকবে। বড় হয়ে গেলে তাকে তোমার কাছেই দিয়ে দেবো। কিন্তু সে মানেনি। তার সমস্ত দায়িত্ব তার স্বামী নেবে।

ইউকে/এএস