বাঁশখালী সংবাদদাতা: বুধবার (৩০ জুন) রাতভর টানা বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে সাতটি ছরার (পাহাড়ি ঝর্ণা) অন্তত ৫২ স্পটে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। এতে ৩৬ গ্রাম লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। রাস্তাঘাট, ঘর-বাড়ি, ক্ষেত-খামার ভেসে গছে ঢলে। আজ বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত তিন শতাধিক পারিবার পানিবন্দি হয়ে আছে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, বাঁশখালী পৌরসভার বাহার উল্লাহ পাড়া, কেবল কৃষ্ণ মহাজন পাড়া, মহাজন পাড়ায় জলদি ছরার পাড় ভেঙে তিন শতাধিক ঘর, ৩২টি পুকুর, ১২টি গ্রামীণ রাস্তার ওপর দিয়ে ৪/৫ ফুট করে পাহাড়ি ঢল প্লাবিত হয়েছে। কাঁচা ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে সাতটি। স্থানীয়রা বৃহস্পতিবার বিকালেও ঘরে ডুকতে পারেনি। অনেকে কাঁচা ঘর পাহাড়ি ঢলে চুপষে থাকায় ভেঙে পড়ার আতঙ্কে রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা বিকাশ দাশ বলেন, জলদী ছরার অধিকাংশ এলাকায় প্রভাবশালী দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করায় ছরা দিয়ে পাহাড়ি ঢল প্লাবিত হতে পারছে না। এতে ছরার পাড় ভেঙে বসতভিটা ও রাস্তাঘাটের ওপর দিয়ে প্লাবিত হচ্ছে। কোন জনপ্রতিনিধি ছরা দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণকারীদের বিরুদ্ধে কোন ধরণের ব্যবস্থাগ্রহণ না করায় স্থানীয় দুর্ভোগ লেগেই আছে।
পুঁইছড়ি ইউনিয়নের ৮নম্বর ওয়ার্ডের নাপোড়া গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, পাহাড়ি ঢল পুরো গ্রামে তাণ্ডব চালিয়েছে। ঢলে ভেসে গেছে আস্ত নাপোড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সড়কের দীর্ঘাংশ। কয়েকটি ব্রিজের দুপাশ ভেঙে যাওয়ায় যোগাযোগ বন্ধ হয়ে রয়েছে।
ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শের আলী আলী বলেন, আমার ৫২ বছর বয়স এখন। এই বয়সে আমি কখনও পাহাড়ি ঢলের এরকম তাণ্ডব দেখিনি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা গত বছর ৬২ লাখ টাকা দিয়ে নাপোড়া ছরা খননের কাজ করেছে। ওই খনন কাজের কোন স্মৃতিচিহ্ন নেই। সব ভেসে গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পাহাড়ি ঢলে বাঁশখালী পৌরসভা, পুঁইছড়ি, শীলকূপ, চাম্বল, শেখেরখীল, বৈলছড়ি ও কালীপুর ইউনিয়নের ৩৬টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
বাঁশখালী উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা আবুল কালাম মিয়াজি বলেন, বাঁশখালীর বিভিন্ন গ্রামে পাহাড়ি ঢলে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধিদের লিখিত প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জনপ্রতিনিধিদের প্রতিবেদন দেখেই চূড়ান্ত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বলা যাবে।
ইউকে/এএস