তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ: হাতের নাগালে পাওয়া যাচ্ছে অ্যাম্বুল্যান্স। এতে সময় অপচয় ও ভোগান্তি কমবে রোগী ও স্বজনদের।
অ্যাপের মাধ্যমে অ্যাম্বুল্যান্স, চিকিৎসক, আইসিইউ এবং মৃত মানুষের সেবায় মরদেহবাহী গাড়ি নিয়ে এসেছে নতুন রাইড শেয়ারিং প্রতিষ্ঠান ডিজিটাল রাইড। করোনাকালে ডিজিটাল রাইডচালকদের জন্য দিচ্ছে এক হাজার টাকা বোনাস।
এত দিন দেশে শুধু সুস্থ-সবল মানুষদের জন্য ছিল রাইড শেয়ারিং সার্ভিস। এবার সাশ্রয়ী খরচে নিরাপদ ও আরামদায়ক ভ্রমণ নিশ্চিতের পাশাপাশি অ্যাম্বুল্যান্স, আইসিইউ, ডাক্তার, নার্স, মরদেহবাহী গাড়িসহ বেশ কিছু ভিন্ন সুবিধাও দিচ্ছে ডিজিটাল রাইড।
ডিজিটাল রাইডের সিইও ফখরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘করোনার এ সময়ে অ্যাম্বুল্যান্সচালকদের সহায়তা ও ন্যায্য ভাড়া নিশ্চিতে ডিজিটাল রাইডের অ্যাপস ব্যবহারে এক হাজার টাকা বোনাস অফার দেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে অনেক সাশ্রয়ী ভাড়ায় স্বাস্থ্যসেবা ও আইসিইউ ফ্যাসিলিটি মানুষের দোরগোড়ায় পোঁছে যাবে।’
এর বাইরেও বিশেষায়িত অ্যাম্বুল্যান্সে থাকবে চিকিৎসক, নার্সসহ সব জরুরি সরঞ্জাম। এটি ডিজিটাল রাইডের একটি ইউনিক সেবা। নিরাপদ ভ্রমণ নিশ্চিতে ডিজিটাল রাইড প্রতি সপ্তাহে চালকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও চিকিৎসা সহায়তা দেবে। বীমা সুবিধাসহ চালকদের লাভবান করতেও নানা উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
একমাত্র ডিজিটাল রাইড এক্সক্লুসিভ অ্যাম্বুল্যান্সের সেবা নিয়ে আসছে। রাইড সার্ভিসে সাধারণ, আইসিইউ, মরদেহবাহী অ্যাম্বুল্যান্সের সেবা অ্যাপসের মাধ্যমে পাওয়ায় খুশি ব্যবহারকারীরা।
ভুক্তভোগী কয়েকজনের অভিয়োগ, হাসপাতালের সামনে সারি বেঁধে দাঁড়িয়ে থাকে বহু অ্যাম্বুল্যান্স। কিন্তু রোগী পেলেই ভাড়া হাঁকা হয় অনেক বেশি। এই করোনাকালেও হাসপাতালের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা অ্যাম্বুল্যান্স না নিয়ে অন্য কোথাও থেকে কম টাকায় ভাড়া করবেন, সে সুযোগও নেই। হাসপাতালকেন্দ্রিক ‘অ্যাম্বুল্যান্স সিন্ডিকেট রোগীকে বাইরের অ্যাম্বুল্যান্সে তুলতেই দেবে না। তাদের এক কথা, অন্য অ্যাম্বুল্যান্স নিতে হলে তাদের টাকা দিতে হবে।
হাসপাতালকে কেন্দ্র করে অ্যাম্বুল্যান্সের মতো একটি জরুরি পরিবহনসেবাকে ঘিরে এই নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি চলছে বছরের পর বছর ধরে।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়ার ২০ শতাংশ কমিশন দিতে হয় হাসপাতালের কর্মচারী অথবা ওয়ার্ডবয়দের। এ কারণে খরচ পোষাতে মালিকরা রোগীদের কাছ থেকে বাড়তি ভাড়া আদায় করেন। এ ক্ষেত্রে অ্যাম্বুল্যান্স মালিক ও চালকদের ঐক্য রয়েছে। তবে অ্যাপে অ্যাম্বুল্যান্স চালু হওয়ায় এগুলো কমবে- বলছেন সংশ্লিষ্টরা। এতে অ্যাম্বুল্যান্স সেবাদানকারী মালিক, চালক ও সেবা গ্রহণকারী- সবার জন্য উপকার হবে- দাবি ডিজিটাল রাইডের কর্মকর্তাদের।
দেশে অ্যাম্বুল্যান্সসেবা সহজ করতে সরকার কর ছাড় দিয়ে রেখেছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) শুল্কতালিকা অনুযায়ী, দেড় হাজার সিসি (ইঞ্জিনক্ষমতা) পর্যন্ত একটি পুরনো বা রিকন্ডিশন্ড অ্যাম্বুল্যান্স আমদানিতে মোট করভার ৩১ শতাংশ। একই ক্ষমতার একটি মাইক্রোবাস আমদানিতে কর দিতে হয় ১২৮ শতাংশের মতো।
অ্যাম্বুল্যান্স সেবাদানকারী সংশ্লিষ্টদের দাবি, অ্যাম্বুল্যান্সের ভাড়ার কোনো তালিকা নেই। নেই সুনির্দিষ্ট কোনো নীতিমালাও। যে যেভাবে পারছে, রাস্তায় সমানে অ্যাম্বুল্যান্স নামাচ্ছে। তাঁরা বলেন, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে রোগী পাওয়ার বিষয়টি নির্ভর করে হাসপাতালগুলোর কর্মচারীদের (ওয়ার্ডবয় ও আয়া) ওপর। এ জন্য তাদের ভাড়ার অন্তত ২০ শতাংশ কমিশন দিতে হয়। এই কমিশন বাণিজ্য না থাকলে ভাড়া অনেকটাই কমে যেত। অ্যাপভিত্তিক রাইড শেয়ারে অ্যাম্বুল্যান্সসেবা যুক্ত করায় স্বাগত জানিয়েছেন স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্টরা।
এভাবেই হাজারো মানুষের জরুরি সেবাকে প্রাধান্য দিয়ে ২৪ ঘণ্টা জরুরি অ্যাম্বুল্যান্সসেবা নিয়ে পাশে রয়েছে ডিজিটাল রাইড।
ইউকে/এএস