বার্তাকক্ষ প্রতিবেদন: কিউবার কমিউনিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে গত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় বিক্ষোভের পর সেখানে ব্যাপক অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। কিউবার বহু শহর এবং নগরীতে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমেছে, তারা ‘স্বৈরাচার নিপাত যাক’ এবং ‘স্বাধীনতা’ বলে স্লোগান দিচ্ছে।
এই ক্যারিবীয় দ্বীপে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ খুবই বিরল। সরকারবিরোধী যেকোনো ভিন্নমত সেখানে দমন করা হয়। কিন্তু কিউবার সান আন্তনিও শহর থেকে একজন বিক্ষোভকারী বলেন, ‘আমরা ভীত নই। আমরা পরিবর্তন চাই। আমরা আর কোনো স্বৈরাচার চাই না।’
যুক্তরাষ্ট্রের একেবারে নাকের ডগায় এই দেশটিতে সম্প্রতি এমন কী ঘটেছে, যার ফলে সেখানে কমিউনিস্ট শাসনের বিরুদ্ধে এ রকম ব্যাপক বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে?
বিবিসি নিউজ মুন্ডুর লিওমান লিমা এ ব্যাপারে বলেন, রবিবারের এই বিক্ষোভ মনে হচ্ছে তীব্র অর্থনৈতিক এবং স্বাস্থ্যসংকটের ফলে সমাজে যে ব্যাপক হতাশা তৈরি হয়েছে, তারই ফল।
করোনাভাইরাস মহামারি এবং অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় সরকার যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে, তা কিউবার সাধারণ মানুষের জীবন আরো কঠিন করে তুলেছে।
২০২০ সালে কিউবা বেশ ভালোভাবেই করোনাভাইরাসের সংক্রমণ সীমিত রাখতে পেরেছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে সেখানে ব্যাপকভাবে সংক্রমণ বেড়েছে।
গত রবিবার কিউবায় সরকারি হিসাবে ছয় হাজার ৭৫০ জন করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছে, যদিও বিরোধী গোষ্ঠীগুলোর দাবি, প্রকৃত সংখ্যা আসলে এর চেয়ে অনেক বেশি।
গত সপ্তাহে দেশটিতে প্রতিদিনই সংক্রমণ এবং মৃত্যুর সংখ্যায় নতুন রেকর্ড হয়েছে, যা দেশটির স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে প্রচণ্ড চাপের মুখে ফেলেছে।
কিউবার নাগরিকদের দাবি, তাদের আত্মীয়রা কোনো চিকিৎসা ছাড়া বাড়িতেই মারা গেছে।
লিসভেইলিস এচেনিকের ক্ষেত্রে এ রকমটাই হয়েছিল। তার ৩৫ বছর বয়সী ভাই বাড়িতে মারা যায়, কারণ হাসপাতালে তাকে ভর্তি করার মতো কোনো জায়গা খালি ছিল না। আর মিগেল পেরেজ নামে আরেকজন দাবি করেছেন, তার গর্ভবতী স্ত্রী চিকিৎসার অবহেলায় মারা গেছে।
কিউবার সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু হ্যাশট্যাগে সেখানে মানবিক হস্তক্ষেপের জন্য আবেদন জানানো হচ্ছিল। এরপর হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভে যোগ দেয়। হাসপাতালগুলো যে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে, এ রকম কিছু ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছিল।
সূত্র : বিবিসি বাংলা।
ইউকে/এএস