রাজশাহীতে সবকিছু বন্ধ থাকলেও চলাচল বেড়েছে সড়কে

নিজস্ব প্রতিবেদক: সাময়িক শিথিলতার পর সরকার ঘোষিত ‘লকডাউনের’ চতুর্থ দিন চলছে সোমবার (২৬ জুলাই)। তবে দিন যতই গড়াচ্ছে ‘লকডাউন’ অমান্য করার প্রবণতা ততই বাড়ছে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোরতার কারণে শহরের শপিং কমপ্লেক্স, মার্কেট, বিপণিবিতাণসহ সব ধরনের দোকানপাট ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। সরকারি-বেসরকারি অফিস-আাদালতও রয়েছে বন্ধ। কেবল কাঁচাবাজার ও ওষুধের দোকান খোলা রয়েছে। এর পরও সড়কে বিধি-নিষেধ অমান্য করে মানুষের চলাচল বেড়েছে। অনেকেই হেঁটে বাইরে আসছেন। কেউ কেউ বিভিন্ন স্টিকার লাগিয়ে প্রাইভেটকার ও ব্যক্তিগত মোটরসাইকেল বের করে সড়কে চালাচ্ছেন।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বাধার মুখে পড়ছেন। ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা গুনছেন। এরপরও বিভিন্ন অজুহাতে সাধারণ মানুষ বিধি-নিষিধ ভেঙে বাড়ি থেকে বাইরে বের হচ্ছেন। মাস্কও থাকছে না তাদের মুখে। সড়কে মানুষের উপস্থিতি বাড়ায় পাড়া-মহল্লার গলিপথে আবারও চলছে অটোরিকশা। অথচ রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে এখনও থামছে না মৃত্যুর মিছিল। করোনা ইউনিটে গেল ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে রাজশাহীরই রয়েছেন ১২ জন।

রাজশাহী জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ কাউছার হামিদ জানান, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বাধ্য হয়ে আরও কঠোর অবস্থানে গেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও ভ্রাম্যামাণ আদালত। রাজশাহীতে ‘লকডাউনের’ তৃতীয় দিন রোববার (২৫ জুলাই) স্বাস্থ্যবিধি না মানায় ৬২ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এ সময়ে জরিমানা করা হয়েছে ৫১ হাজার ১৫০ টাকা। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে মহানগরে ২২টি মামলায় ২৩ হাজার ৭০০ টাকা জরিমানা করা হয়। আর জেলার উপজেলাগুলোতে ৪০টি মামলায় ২৭ হাজার ৪৫০ টাকা জরিমানা করা হয়। স্বাস্থ্যবিধি না মানায় একজনকে কারাদণ্ডও দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি জরিমানা করা হয়েছে চারঘাট উপজেলায়। এ উপজেলায় মোট সাতটি মামলায় ১৩ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মোহাম্মদ আবু আসলাম জানান, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী রাজশাহীতে ২৩ জুলাই থেকে ‘লকডাউন’ কার্যকর করা হয়েছে। রাজশাহী জেলা প্রশাসনের চারটি ও নয়টি উপজেলায় ১৮টি ভ্রাম্যমাণ টিম কাজ করছে। এছাড়া সেনাবাহিনী, বিজিবি, র‌্যাব ও পুলিশের টহল দল কাজ করছে। মহানগরের প্রবেশপথগুলোতেও রয়েছে বাড়তি নজরদারি।

তিনি আরও বলেন, নির্দেশনা অমান্য করে কেউ জরুরি কারণ ছাড়া সড়কে বের হলে মামলা ও জরিমানা করা হচ্ছে। এটা অব্যাহত থাকবে। এছাড়া যাদের সামর্থ নেই তাদের মধ্যে বিনামূল্যে মাস্ক বিতরণ করা হচ্ছে। বাড়িতে খাবার না থাকলে কেউ জাতীয় তথ্য সেবা ‘৩৩৩’ নম্বরে ফোন দিলে তার বাড়িতে খাবার পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি করোনা ভাইরাসের উচ্চ সংক্রমণ প্রতিরোধে সাধারণ মানুষকে এ ব্যাপারে সচেতন করতে বিভিন্ন কার্যক্রমও পরিচালনা করা হচ্ছে।

ইউকে/এএস