নিজস্ব প্রতিবেদক: আগামী ৫ আগস্ট শেষে হবে চলমান কঠোর ‘লকডাউন’। কিন্তু সময় যত গড়াচ্ছে রাজশাহীতে মানুষজনের চলাচল ততই বাড়ছে। বিশেষ করে সড়কে ব্যক্তিগত যানবাহন চলাচল বেড়েছে। অথচ কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে কেবলমাত্র জরুরি পরিষেবা ছাড়া ব্যক্তিগত সব ধরনের যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
লকডাউন বাস্তবায়নের জন্য পুলিশ, আনসার, র্যাব, বিজিবি ও সেনাবাহিনী ২৪ ঘণ্টাই মাঠ পর্যায়ে কর্তব্য পালন করছে। এরপরও মানুষজন ঘর থেকে বের হচ্ছে।
আর বিধিনিষেধ ভেঙে বাইরে বেরিয়ে অনেকেই মামলা-জরিমানার মুখেও পড়ছেন। লকডাউনের পঞ্চম দিনে গতকাল মঙ্গলবারও (২৭ জুলাই) স্বাস্থ্যবিধি না মানায় রাজশাহীতে ৭১ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। একই সময়ে জরিমানা আদায় করা হয়েছে ৪৫ হাজার ৫০ টাকা।
রাজশাহী জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ কাউছার হামিদ জানান, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে মঙ্গলবার সকাল থেকে রাজশাহী মহানগরী ও উপজেলাগুলোতে এই জরিমানা করা হয়। এর মধ্যে মহানগরে ৩২টি মামলায় ২৫ হাজার ৬০০ টাকা জরিমানা করা হয়।
আর রাজশাহী জেলার নয়টি উপজেলায় ৩৯টি মামলায় ১৯ হাজার ৪৫০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। বিধিনিষেধ ভেঙে বাইরে আসায় এবং স্বাস্থ্যবিধি না মানায় একজনকে কারাদণ্ডও দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, সকাল থেকে সড়ক এবং পাড়া-মহল্লার সড়ক অনেকটা ফাঁকা থাকলেও দুপুর গড়াতেই চিত্র পাল্টে যেতে শুরু করে। বিকেলে হলেই মহানগরের গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে বিভিন্ন বয়েসের মানুষের আড্ডা জমে উঠছে। দোকানের শার্টার অর্ধেক খোলা রেখে চায়ের স্টলে শুরু হচ্ছে কেনাবেচা।
বুধবার মহানগরীর নওদাপাড়া আমচত্বর, শালবাগান, গোরহাঙ্গা রেলগেট, শহীদ কামারুজ্জামান চত্বর, নিউমার্কেট, রাণীবাজার, গণকপাড়া, সাহেববাজার জিরোপয়েন্ট, আলুপট্টি, লক্ষ্মীপুরসহ গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ঘুরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যাপক তৎপরতার দেখা গেছে। তবে এর মধ্যেও প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেলসহ ব্যাক্তিগত যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে। সড়কে এখন অনেকটায় স্বাভাবিক হয়ে এসেছে বিভিন্ন ধরনের ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচলও।
এছাড়া মহানগরীর সাহেববাজার কাঁচাবাজার, নিউমার্কেট কাঁচাবাজার ও শালবাগান কাঁচাবাজারে মানুষ গমগম করছে। মাস্টারপাড়া কাঁচাবাজার ও মুদিদোকানগুলোতে ভিড় থাকছে বেশি। সেখানে পুলিশ মাইকিং করলেও স্বাস্থ্যবিধি কোনো গুরুত্বই পাচ্ছে না। বেশিরভাগ মানুষের মুখেই মাস্ক নেই। আর যাদের মাস্ক আছে তাদের মাস্ক থাকছে থুতনিতে। শারীরিক দূরত্বের কোনো বালাই নেই।
কঠোর লকডাউন বাস্তবায়ন প্রশ্নে রাজশাহী জেলা প্রশাসক মো. আবদুল জলিল বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে মানুষকে ঘরে রাখতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কারও ঘরে খাবার না থাকলে তিনি ‘৩৩৩’ ফোন দিলেই খাবার পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। এরপরও হাসাপাতালে রোগী ভর্তি করতে, করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা দিতে, করোনা প্রতিরোধে টিকা দিতে, ওষুধ কিনতে, ব্যাংক থেকে টাকা তুলতে, কাঁচাবাজার করতে মানুষ বাইরে বের হচ্ছেন। তবে জনসংখ্যা অনুপাতে এর সংখ্যা খুবই কম। তারা কঠোর অবস্থানে আছেন। কিন্তু মানুষের দৈনন্দিন চাহিদার কথাও মাথায় রাখতে হচ্ছে।
ইউকে/এএস