এসপির বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা নারী সহকর্মীর

বার্তাকক্ষ প্রতিবেদন: পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) এসপি মোক্তার হোসেনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনে মামলা করেছেন এক নারী পুলিশ পরিদর্শক। তাঁর অভিযোগ, ২০১৯ সালে সুদানের দারফুরে জাতিসংঘ শান্তি মিশনে থাকাকালে এবং পরে দেশে ফেরার পর ঢাকার উত্তরার একটি হোটেলে তাঁকে কয়েক দফা ধর্ষণ করেন পুলিশ কর্মকর্তা মোক্তার।

গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭-এর বিচারক বেগম মোছা. কামরুন্নাহারের আদালতে ওই নারী পুলিশ পরিদর্শক মামলাটির আবেদন করেন। তখন বিচারক প্রায় দেড় ঘণ্টা বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করেন। পরে বিচারক অভিযোগটি সরাসরি এজাহার হিসেবে গণ্য করতে ঢাকার উত্তরা পূর্ব থানাকে নির্দেশ দেন। বাদীপক্ষের আইনজীবী সালাহউদ্দিন খান কালের কণ্ঠকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

জানা গেছে, যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে, সেই পুলিশ সুপার মোক্তার হোসেন বর্তমানে বাগেরহাটে পিবিআইয়ে কর্মরত।

টেলিফোনে চেষ্টা করেও অভিযোগের বিষয়ে তাঁর বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, এসপি মোক্তার হোসেন ২০১৯ সালের মে মাসে সুদানে জাতিসংঘের শান্তি মিশনে বাংলাদেশ পুলিশের কন্টিনজেন্টের কমান্ডার হিসেবে যোগ দেন। বাদী আগে থেকেই সেখানে কর্মরত থাকায় মিশনসংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে পূর্ব-অভিজ্ঞতা ছিল। সে কারণে বিভিন্ন অজুহাতে সহযোগিতার নামে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেন মোক্তার। সেখানে তাঁদের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০১৯ সালের ২০ ডিসেম্বর দুপুরে আসামি বাদীর বাসায় গিয়ে ধর্ষণ করেন। এ ঘটনা কাউকে না জানাতে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি-ধমকি দেন। ওই বছরের ২২ ডিসেম্বর ওই বাসায় গিয়ে আসামি প্রথমে ‘ভুল হয়েছে’ বলে ক্ষমা চান এবং তার পরই আবারও ধর্ষণ করেন। ২০২০ সালের ৩ জানুয়ারি আসামি ‘মুখে মুখে কলেমা পড়ে বিয়ের প্রলোভন’ দেখিয়ে বাদীকে আবারও ধর্ষণ করেন। পরে আসামি সুদান ও বাংলাদেশে আরো কয়েক দফা বাদীকে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।

মামলার অভিযোগে আরো বলা হয়, দেশে ফেরার পর বাদী বিয়ে নিবন্ধনের তাগিদ দিলে আসামি অশোভন আচরণ শুরু করেন এবং বাদীকে এড়িয়ে যেতে থাকেন। এ অবস্থায় বাদী গত ২১ এপ্রিল আসামি এসপি মোক্তার হোসেনের রাজারবাগের বাসায় গিয়ে আশ্বাস অনুযায়ী বিয়ের কাবিননামা সম্পন্ন করার তাগিদ দিলে আসামি অস্বীকৃতি জানান। এক পর্যায়ে মোক্তার হোসেন, তাঁর স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যরা উত্তেজিত হয়ে বাদীকে মারধর করেন এবং হুমকি দেন। গত ১০ আগস্ট বাদী উত্তরা পূর্ব থানায় মামলা করতে গেলে থানা কর্তৃপক্ষ মামলা গ্রহণ না করে আদালতে মামলা করার জন্য বলে। এ জন্য আদালতে মামলা করেছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করেন বাদী।

ইউকে/এএস