বার্তাকক্ষ প্রতিবেদন: হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি ও স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সংগঠিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারক আমির হোসেন ইন্তেকাল করেছেন।(ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৩ বছর ৮ মাস।
আজ মঙ্গলবার সকাল ৭টা ৫৫মিনিটে তিনি ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। তিনি দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলেন। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে ও দুই মেয়েসহ অসংখ্য গুনগ্রাহী রেখে গেছেন। আজ দুপুরে সুপ্রিম কোর্টে তার নামাজে জানাযা শেষে কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলার পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে বলে জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের বিশেষ কর্মকর্তা মো. সাইফুর রহমান।
এদিকে বিচারপতি আমির হোসেনের মৃত্যুতে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আজ সুপ্রিম কোর্ট বসছেন না। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন আজ সকালে সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগ (আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগ) নিয়ে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান। প্রধান বিচারপতি বলেন, একজন সিটিং বিচারপতি মারা গেলে সুপ্রিম কোর্ট বন্ধ রাখা হয়, এটা আমাদের প্রথা।
বিচারপতি আমির হোসেনের মৃত্যুতে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।
বিচারপতি আমির হোসেন ১৯৫৭ সালের ৩০ নভেম্বর কিশোরগঞ্জের নিকলীতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে পড়াশুনার সময় ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের (ঢাকসু) মাহমুদুর রহমান মান্না-আখতারুজ্জামান কমিটির নির্বাচিত সদস্য ছিলেন। তিনি ঢাবি থেকে এলএলবি (অনার্স), এলএলএম পাস করার পর ১৯৮৪ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি মুন্সেফ (সহকারী জজ) হিসেবে বিচার বিভাগে নিয়োগ পান। ২০০৯ সালের ৬ মে তিনি জেলা জজ হিসেবে পদোন্নতি পান। এরপর ২০১৫ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি দুইবছরের জন্য হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। দুই বছর পর ২০১৭ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি তাকে হাইকোর্ট বিভাগে স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। ২০১৭ সালের ১১ অক্টোবর তাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর সদস্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি সেখানেই দায়িত্বরত ছিলেন।
এদিকে, আজ দুপুর পৌণে ২টায় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবন প্রাঙ্গণে তার নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর তার মরদেহ কিশোরগঞ্জের নিকলীতে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানেই তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে বলে জানা গেছে।
ইউকে/এএস