ইভ্যালির বিরুদ্ধে মামলা, শাস্তির কথা ভাবছে মন্ত্রণালয়

বার্তাকক্ষ প্রতিবেদন: অনলাইনে ব্যবসার (ই-কমার্স) নামে প্রতারণার অভিযোগ ওঠার পর আলোচনায় আসে ইভ্যালি। সরকারের কঠোর নজরদারির মধ্যেও নতুন নতুন অফার দিয়ে গ্রাহকের সঙ্গে এখনো প্রতারণা করছে প্রতিষ্ঠানটি। এ অবস্থায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় নতুন করে ভাবছে, কিভাবে প্রতিষ্ঠানটিকে শাস্তির আওতায় আনা যায়।

গতকাল বুধবার ভোগ্যপণ্যের বাজার নিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে ইভ্যালির প্রতারণা নিয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের এক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যসচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, এ বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডাব্লিউটিও সেল কাজ করছে। শিগগিরই ইভ্যালিকে শাস্তির আওতায় আনা হবে।

গতকাল সিরাজগঞ্জে ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাসেল ও চেয়ারম্যান মোছা. শামীমা নাসরিনের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও গ্রাহক হয়রানির অভিযোগে মামলা করেছেন মো. রাজ নামের এক গ্রাহক।

গত বুধবার সিরাজগঞ্জের জ্যেষ্ঠ বিচার বিভাগীয় হাকিম জেসমিন আরার আদালতে অভিযোগ দায়ের করেন রাজ। তিনি জেলার কামারখন্দ উপজেলার বাসিন্দা। অভিযোগ আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

রাজ অভিযোগ করেছেন যে আকর্ষণীয় মূল্যছাড়ের অফার দিলে চলতি বছরের ৪ মে তিনি ইভ্যালিতে একটি টেলিভিশন, পেনড্রাইভ, আয়রন মেশিনসহ পাঁচটি পণ্যের অর্ডার করেন এবং নিয়ম অনুযায়ী এসব পণ্যের মূল্য বাবদ ৫০ হাজার ৭৩৭ টাকা পরিশোধ করেন। ইভ্যালির অফার অনুযায়ী অর্ডার করার সাত থেকে ৪৫ কর্মদিবসের মধ্যে পণ্য সরবরাহ দেওয়ার কথা। তা না দিলে টাকা

ফেরত দেবে। কিন্তু সে অনুযায়ী পণ্য সরবরাহ দেওয়া হয়নি এবং টাকাও ফেরত দেয়নি। বাদী ইভ্যালি কর্তৃপক্ষকে পণ্য সরবরাহ বা টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য তাগাদা দিলে গত ২০ আগস্ট টাকা ফেরত দেবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়। এর পরই তিনি মামলা করেন।

ইভ্যালির বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ ওঠার পর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত ৪ জুলাই একটি নীতিমালা জারি করে। এতে বলা হয়, ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোকে রাজধানীতে পাঁচ দিনের মধ্যে এবং অন্য শহরে ১০ দিনের মধ্যে গ্রাহককে পণ্য সরবরাহ করতে হবে। পণ্য হাতে পাওয়ার পর গ্রাহক মূল্য পরিশোধ করবে। এ ছাড়া ইভ্যালির বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সরকারের চার প্রতিষ্ঠানকে চিঠি পাঠায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। প্রতিষ্ঠান চারটি হচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। ইভ্যালির ওপর করা বাংলাদেশ ব্যাংকের এক পরিদর্শন প্রতিবেদনের পর্যবেক্ষণের পরিপ্রেক্ষিতে ৪ জুলাই বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এসব চিঠি পাঠায়। কিন্তু ইভ্যালি এখনো প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে পণ্যের অর্ডার নিচ্ছে এবং সময়মতো পণ্য সরবরাহ করছে না।

ইউকে/এএস