‘দেশের জিডিপিতে অসামান্য ভূমিকা রাখছে মৎস্য খাত’

বার্তাকক্ষ প্রতিবেদন: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, বর্তমানে দেশের জিডিপিতে অসামান্য ভূমিকা রাখছে মৎস্য খাত। বিশেষ করে সাধারণ মাছের তুলনায় অপ্রচলিত মৎস্য যেমন কুচিয়া, কাকড়া চাষ বেড়েছে এবং মুক্তা চাষেও সফলতা আসছে।

শনিবার (২৮ আগস্ট) জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০২১ উপলক্ষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। সকাল ১১টায় রাজধানীর রমনায় মৎস্য ভবনের সভাকক্ষে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কাজী শামসসহ অন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

মন্ত্রী বলেন, দেশের বিপুল জনগোষ্ঠীর পুষ্টি চাহিদা পূরণ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, দারিদ্র্য বিমোচন ও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে মৎস্য খাত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। বর্তমানে দেশের মোট জিডিপির ৩ দশমিক ৫২ শতাংশ, কৃষিজ জিডিপির এক চতুর্থাংশের বেশি (২৬.৩৭ শতাংশ) ও মোট রপ্তানি আয়ের ১.৩৯ শতাংশ মৎস্য খাতের অবদান। দেশের প্রায় দুই কোটি জনগোষ্ঠী (১২ শতাংশের অধিক) মৎস্য খাতের বিভিন্ন কার্যক্রমে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সম্পৃক্ত থেকে জীবিকা নির্বাহ করছেন।

রেজাউল করিম বলেন, আমরা চেষ্টা করছি যেন মাছের বহুমাত্রিক ব্যবহার নিশ্চিত করা যায়। বঙ্গবন্ধু ঘোষণা করেছিলেন, ‘মাছ হবে দ্বিতীয় প্রধান বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী সম্পদ’। মৎস্য খাতের গুরুত্ব বিবেচনা করে মুজিববর্ষ উপলক্ষে মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে নেত্রকোনা জেলার ‘দক্ষিণ বিশিউড়া’ ও শরীয়তপুর জেলার ‘হালইসার’কে মৎস্য গ্রাম হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীকে ‘বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটজ’ ঘোষণা করা হয়েছে। বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা ৩০ প্রজাতির দেশীয় বিলুপ্তপ্রায় মাছের প্রজনন কৌশল ও চাষ প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে, যা সারা দেশে সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। দেশীয় মাছ সংরক্ষণে ময়মনসিংহে ‘লাইভ জিন’ ব্যাংক স্থাপন করা হয়েছে। ফলে দেশীয় মাছ আবার ফিরে এসেছে বাঙালির পাতে। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে উন্মুক্ত করা হয়েছে নতুন উদ্ভাবিত চতুর্থ প্রজন্মের অধিক উৎপাদনশীল ও দ্রুত বর্ধনশীল ‘সুবর্ণ রুই’।

মন্ত্রী বলেন, ইলিশ আমাদের জাতীয় মাছ। বাংলাদেশের ইলিশ জিআই সনদ পেয়ে নিজস্ব পরিচয়ে বিশ্ববাজারে হাজির হয়েছে। জাতীয় অর্থনীতি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, প্রাণিজ আমিষের যোগান ও দারিদ্র্য বিমোচনে ইলিশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। ইলিশ সম্পদ রক্ষা ও ক্রমবর্ধমান উন্নয়নে সরকার নানামুখী সমন্বিত কার্যক্রম গ্রহণ করছে, যার ফলে ইলিশের উৎপাদন উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। জাতীয় অর্থনীতিতে মৎস্য খাতের অবদান, মানুষের পুষ্টি চাহিদা পূরণে মাছের গুরুত্ব, রপ্তানি আয় বৃদ্ধি, মাছ চাষে আধুনিক প্রযুক্তির সম্প্রসারণ, কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচন ও দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে জনগণকে আরো সম্পৃক্ত ও সচেতন করা হচ্ছে।

২৮ আগস্ট থেকে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০২১ শুরু হয়েছে। আগামী ৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করার শর্তে এটি পালন করা হবে। জাতীয় মৎস্য সপ্তাহের এবারের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘বেশি বেশি মাছ চাষ করি, বেকারত্ব দূর করি’।

ইউকে/এএস