বার্তাকক্ষ প্রতিবেদন: ষড়যন্ত্রকারীদের বিষয়ে সবাইকে সর্তক থাকার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, এখনো যুদ্ধাপরাধী, পরাজিত শক্তি, ১৫ আগস্টের খুনি এবং তাদের দোসররা চক্রান্ত করে যাচ্ছে।
যেসব আন্তর্জাতিক শক্তি মুক্তিযুদ্ধের সময় বিরোধিতা করেছিল তাদের কেউ কেউ এদের মদদ দিচ্ছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ছাত্রলীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় (ভার্চ্যুয়াল) এ কথা বলেন তিনি।
রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে আয়োজিত এ আলোচনা সভায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, যারা পরাজিত শক্তি তারা সব সময় সক্রিয় ছিল। এখনও যুদ্ধাপরাধী, পরাজিত শক্তি এবং ১৫ আগস্টের খুনি, যাদের ফাঁসি হয়েছে তারা তো বটেই, তাদের ছেলে-পেলেরা এবং যারা বেঁচে আছে তারা এবং তাদের ছেলে-পেলেরা এখনো বাংলাদেশের বিরুদ্ধে চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, যেসব আন্তর্জাতিক শক্তি আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় বিরোধিতা করেছিল, তাদের কিছু কিছু এদের মদদ দিয়ে থাকে। কাজেই এই ব্যাপারে জাতিকে সতর্ক থাকতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, এই বাংলাদেশে ১৫ আগস্টে যে হত্যাকাণ্ড ঘটে গেছে এবং এরপরে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা। তারপরে তো বহুবার আমার ওপরেও হামলা এমনকি ৭৪ সালে কামালের ওপরেও হামলা হয়েছিল। তাকেও গুলি করে হত্যা করার চেষ্টা করা হলো, যখন দেখলো বেঁচে গেছে তখন তার বিরুদ্ধে অপবাদ দেওয়া হলো, মিথ্যা অপবাদ ছড়ানো হলো। অর্থাৎ পরাজিত শক্তি সবসময়ই এক্ষেত্রে সক্রিয় ছিল।
তিনি বলেন, জাতির পিতা কোনো কাজ অধরা রেখে যাননি। সব কাজের ভিত্তি তিনি প্রস্তুত করে গেছেন। যখনই এই পরাজিত শক্তি দেখলো বাংলাদেশকে আর বাধা দিয়ে রাখা যাবে না তখনই কিন্তু ১৫ আগস্টের ঘটনা ঘটিয়েছিল তারা।
ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে সামনে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে শেখ হাসিনা বলেন, সেই কথা মনে রেখেই কিন্তু আমাদের পথ চলতে হবে- যে আমাদের পায়ে পায়ে শত্রু আছে, পদে পদে বাধা আছে, আমাদের চলার পথ মসৃণ না, কন্টকাকীর্ণ। আমাদের চড়াই উৎরাই পার হয়ে এগিয়ে যেতে হবে এবং আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। মাত্র ১২ বছরের মধ্যে আজকে বাংলাদেশ উঠে দাঁড়িয়েছে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে অর্জনে ছাত্রদের ভূমিকার কথা তুলে ধরে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, জাতির পিতা একবার বলেছিলেন যে বাংলাদেশের ইতিহাস ছাত্রলীগের ইতিহাস। কাজেই ছাত্রলীগের এটা মনে রাখতে হবে।
তিনি বলেন, আজকে বাংলাদেশের প্রতিটি অর্জন সেই মাতৃভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠা থেকে শুরু করে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন বা যে কোনো অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সবসময় ছাত্ররাই করেছে। তারাই সংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছে।
বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নিয়ে চলার আহ্বান জানিয়ে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, জাতির পিতার আদর্শটাকে উপলব্ধি করতে হবে, ধারণ করতে হবে এবং সেটা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।
তিনি বলেন, আমি এইটুকুই বলবো এই ধরনের বাঁধা বিঘ্ন আসতে থাকবে। কিন্তু সৎ পথে থাকলে, সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য ও আদর্শ নিয়ে যদি চলা যায় যেকোন কঠিন পথ পারি দিয়ে সাফল্য অর্জন করা সম্ভব। এটা হবেই। কিন্তু এটা ঠিক সত্যের পথ সব সময় কঠিন হয়। আর সেই কঠিন পথকে যারা ভালোবেসে গ্রহন করে এগিয়ে যেতে পারে তারাই সাফল্য আনতে পারে।
কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ মিলনায়তন প্রান্তে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলির সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়, সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যসহ ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।
ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের সভাপতিত্বে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য আলোচনা সভাটি সঞ্চালনা করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ছাত্রলীগের বাৎসরিক প্রকাশনা ‘জন্মভূমি’ এবং ‘জয় বাংলা’- ম্যাগাজিনের (২য় সংস্করন) মোড়ক উন্মোচন করেন।
ইউকে/এএস