বিনোদন বিভাগ: মহানায়ক উত্তম কুমারের জন্মদিন শুক্রবার (৩ সেপ্টেম্বর)। ১৯২৬ সালের আজকের এ দিনে কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। বেঁচে থাকলে ৯৫ বছরে পা রাখতেন বাংলা চলচ্চিত্রের সফল এই অভিনেতা।
উত্তম কুমারের পারিবারিক নাম অরুণ কুমার চট্টোপাধ্যায়। মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে চলচ্চিত্রে নাম লিখিয়ে প্রতিষ্ঠা পেতে অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে তাকে। তবে কঠোর পরিশ্রম আর অধ্যবসায়ের মাধ্যমে উত্তম কুমার হয়ে ওঠেন মহানায়ক।
১৯৪৭ সালে ‘মায়াডোর’ সিনেমায় এক্সট্রা শিল্পী হিসেবে চলচ্চিত্রে নাম লেখান উত্তম কুমার। এরপর ১৯৪৮ সালে ‘দৃষ্টিদান’ সিনেমায় অভিনয় করলেও সেটি নাম মাত্র চরিত্রেই। নায়ক ভূমিকায় প্রথম সিনেমা ‘কামনা’। সিনেমাটি মুক্তির পর মুখ থুবড়ে পড়ে। এরপর ১৯৫২ সাল পর্যন্ত তার একের পর এক সিনেমায় ফ্লপ হয়। জুটলো টলিউড ইন্ডাস্ট্রির ফ্লপ মাস্টারের খেতাব।
তবে হাল ছাড়েননি উত্তম কুমার। ব্যর্থতা থেকেই গড়েছিলেন সাফ্যলের রাজ্য। ১৯৫৩ সালে তার অভিনীত ‘সাড়ে চুয়াত্তর’ মুক্তির পর ফ্লপ মাস্টার থেকে হয়ে গেলেন রোমান্টিক নায়ক।
১৯৫৪ সালে উত্তম কুমার চলে আসেন জনপ্রিয়তার শীর্ষে। এক বছরেই ১৪ সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন, যার অধিকাংশই ছিল সফল। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য সিনেমা হচ্ছে ‘অগ্নিপরীক্ষা’।
অভিনয় গুণে দর্শকদের কাছে রোমান্টিকতার স্বার্থক উদাহরণ হয়ে উঠেন উত্তম কুমার। যে কোনো চরিত্রেই নিজেকে মানিয়ে নিতেন অদ্ভুত ক্ষমতা দিয়ে। সময়ের ব্যবধানে নায়ক থেকে উত্তম কুমার হয়ে ওঠেন মহানায়ক।
‘অগ্নিপরীক্ষা’ সিনেমায় সুচিত্রা সেনের সঙ্গে জুটি বেঁধে অভিনয় করেছিলেন উত্তম কুমার। এরপরই তারা বাংলা সিনেমার সবচেয়ে জনপ্রিয় জুটি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হন। এই জুটির অভিনীত অন্যতম সিনেমাগুলো হচ্ছে- ‘হারানো সুর’, ‘পথে হলো দেরি’, ‘সপ্তপদী’, ‘চাওয়া-পাওয়া’, ‘বিপাশা’, ‘জীবন তৃষ্ণা’ ও ‘সাগরিকা’।
শুধু বাংলা সিনেমাতেই নয়, উত্তম কুমার অভিনয়ের দ্যুতি ছড়িয়েছিলেন বলিউডেও। অভিনয়ের পাশাপাশি কণ্ঠের মুন্সিয়ানাও দেখিয়েছেন তিনি।
১৯৮০ সালের ২৪ জুলাই মাত্র ৫৩ বছর বয়সে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান উত্তম কুমার। পরপারে চলে যাওয়ার পরও বাংলা চলচ্চিত্রের কাব্যে আজও জীবন্ত উত্তম কুমার। তার অভিনয় এখনও আলোকিত চলচ্চিত্র প্রেমীদের।
ইউকে/এএস