হবিগঞ্জ সংবাদদাতা: হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলায় পুরুষের সঙ্গে সমানতালে কৃষি কাজে অংশ নিচ্ছেন নারী শ্রমিকরা। তাদের উপার্জনে স্বচ্ছলতা এসেছে উপজেলাটির প্রায় ২ হাজার পরিবারে।
কর্মস্থলে কিছু মানুষ নারীদের বৈষম্যের চোখে দেখলেও তাদের স্বাগত জানিয়েছেন কৃষকরা। চাষাবাদের কিছু কাজে পুরুষের তুলনায় নারী শ্রমিকের চাহিদা এখন বেশি।
জানা গেছে, লাখাইয়ের গোপালপুর, আগাপুর, মাহমুদপুর, মোড়াকরি, বুল্লা, ভবানীপুর ও আগাপুর গ্রামের প্রায় ২ হাজার নারী প্রতিদিন হাওরে কৃষি কাজ করেন। ধানের জমিতে চারা রোপণ, আগাছা পরিষ্কার ও মাটি কাটার কাজে পুরুষের সঙ্গে সমানতালে কাজ করছেন তারা। মজুরিও পান পুরুষদের সমান প্রায়। এতে ওই নারীদের পরিবারের অভাব দূর হওয়ার পাশাপাশি কৃষিক্ষেত্রে কমেছে শ্রমিক সংকট।
উপজেলার কাসিমপুরে মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, পুরুষের সঙ্গে ধানের চারা রোপণে ব্যস্ত নারীরা। সারিবদ্ধ ও শৃঙ্খলার সঙ্গে কাজ করেছেন তারা। চারা রোপণের গতিও পুরুষের সঙ্গে সমানে সমান।
মাঠে কর্মরত মধ্যবয়সী সরস্বতি দাশ, বিশুকা দাশ ও ফালানি দাশের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চলতি রোপা আমনের মৌসুমে এক বিঘা জমিতে চারা রোপণের মজুরি ১ হাজার টাকা। ছয়জন নারী মিলে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রোপণ করতে পারেন দুই বিঘা। সেই হিসাবে প্রতিজন নারীর প্রতিদিনকার রোজগার প্রায় ৩৫০ টাকা।
তারা আরও জানান, রোপা ও বোরো আমনের মৌসুমে প্রায় ৪ মাস নারীরা মাঠে কাজ করেন। বছরের অন্য দিনগুলোতে মাটি কাটা, জমির আগাছা পরিষ্কারসহ বিভিন্ন কাজ করেন। এসব কাজে পুরুষের তুলনায় মজুরি কিছু কম হলেও এই আয় দিয়েই তারা সন্তুষ্ট।
স্থানীয় কৃষক কদ্দুছ মিয়া বলেন, আমি আমার জমি চাষের সময় পুরুষের তুলনায় নারী শ্রমিক বেশি নেই। কারণ, নারী শ্রমিকরা কাজে খুব ভালো। আর পুরুষের তুলনায় তাদের মজুরি কিছুটা কম।
হবিগঞ্জের সাবেক কৃষি কর্মকর্তা মো. আলী আকবর বলেন, শুধু লাখাই উপজেলা নয়, জেলাজুড়েই নারীরা এখন কৃষিকাজ করছেন। নারীদের কিছু লোক বৈষম্যের চোখে দেখলেও কৃষি বিপ্লবে তাদের ভূমিকা রয়েছে। এ বিষয়টিকে অবশ্যই ইতিবাচকভাবে চিন্তা করতে হবে।
ইউকে/এএস